স্বাধীন ভারতের ফুটবলের ইতিহাস

ফিচার ছবিটি ১৯৪৮ সালে লন্ডন অলিম্পিকে খেলা ভারতীয় ফুটবল দলের। স্বাধীন ভারতের ফুটবল টীমের কাছে জুতো কেনার পয়সা ছিল না | কিছু খেলোয়াড় মোজা পরে আর বাকিরা খালি পায়ে খেলেছিলেন।

এইটা সেই সময় ছিল যখন নেহেরুর দৈনিক পরিধান প্যারিস থেকে ড্রাই ক্লিন হয়ে আসতো। নেহেরুর প্রেমিকা এডবিনাকে লেখা চিঠি এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে করে যেতো।

ভারতের প্রথম ম্যাচ ফ্রান্সের সাথে, শুরু থেকে ম্যাচ শেষ হওয়ার কয়েক মুহূর্ত পর্যন্ত স্কোর ১-১ ছিল। একেবারে শেষ মুহুর্তে গোল খেয়ে ভারত হেরে গেছিল। ফ্রান্সের ফুটবলাররা কিন্তু কেউ খালি পায়ে খেলেন নি। ভারতীয় টীমের প্রদর্শনে খুশি হয়ে দর্শকরা Standing Ovation দিয়েছিলেন। ইংল্যান্ডের রাজা জর্জ VI খেলা প্রদর্শনে প্রসন্ন হয়ে ভারতীয় দলটিকে বাকিংহাম প্যালেসে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং সেখানে কথা-বার্তার মাঝে হটাৎ তিনি শৈলেন মান্নার প্যান্টের এক পা তুলে বলেন যে উনি নিজের চোখে দেখতে চেয়েছিলেন সেই স্টিলের মতো শক্ত পা যে এরকম ফুটবলে শট মারতে পারে। (উইকিপেডিয়া)

এরপর ১৯৫০ এ ব্রাজিলে ফিফা ওয়ার্ল্ডকাপ-এর জন্য ভারত কোয়ালিফাই করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টীমকে ব্রাজিল পাঠাতে সরকারের অনুমতি পাওয়া যায় নি এবং সরকার পক্ষ থেকে দেশের মানুষকে বলা হয়েছিল ফিফা খালি পায়ে খেলার (Barefoot) ওপর নিষেধাজ্ঞা লাগিয়েছ। আর ফিফাকে বলা হয়েছিল ভারত গরিব দেশ তাই ব্রাজিল পর্যন্ত পৌছানোর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ আমাদের কাছে নেই। ফিফা জানিয়েছিল যে তারা চায় ভারতের মতো প্রতিভাবান টীম প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করুক। তাই তারা ভারতীয় টীমের আসা-যাওয়া আর থাকা-খাওয়ার সব খরচ নিজেরা দেওয়ার কথা ঘোষণা করে। কিন্তু তবুও সরকার টীম পাঠায় নি।

ওয়ার্ল্ডকাপে কোয়ালিফাই করেও অংশগ্রহণ করতে না পেরে টীমের মনোবল একেবারে ভেঙ্গে যায়। (তারপর থেকে আজ পর্যন্ত ভারত আর কোনদিন ওয়ার্ল্ডকাপের জন্য কোয়ালিফাই করতে পারে নি) এতকিছুর পরেও সেই সময় ফুটবল টীমের জুতোর ব্যবস্থা করা হয় নি।

সেই সময়ের ভারতীয় টীমের ক্যাপ্টেন শৈলেন্দ্রনাথ মান্না বিশ্বের শীর্ষ ১০ জন ক্যাপ্টেনদের মধ্যে একজন ছিলেন। কিছু বছর পর উনিই ভারতীয় ফুটবলের সাথে হওয়া এই প্রতারণার কথা জানান।

আজ ভারতের ৭ টা ফুটবল স্টেডিয়ামের মধ্যে তিনটের নাম নেহেরুর নামে। একটা স্টেডিয়াম নেহেরুর মেয়ে ইন্দিরার নামে। ক্যাপ্টেন শৈলেন্দ্রনাথ মান্নার নাম আজকের জেনেরেশনে বোধ হয় আর কেউ জানে না।

I'd love to hear your thoughts on this post! Please leave a comment below and let's discuss.