চন্দ্র সাহেব ভালো করে আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখে নিলেন সঠিকভাবে চুল কালো হয়েছে কিনা। একবার আবার কালো কালির ব্রাশ বুলিয়ে নিলেন চুলের উপর। চন্দ্র সাহেব মনে করতে লাগলেন যৌবনের কথাঃ চুলের রঙের কোন সমস্যা ছিলোনা। মনে পড়ে গেলো রমিতার কথা। রমিতা তার কলেজের সহপাঠিনী ছিল — রমিতাকে পিছনে বসিয়ে মোটরসাইকেলে যখন ঘুরতেন তখন একটা আলাদা আমেজ ছিল।। মনের কোণে রমিতার স্মৃতি এখনো কোথাও রয়ে গিয়েছে। মাঝেমাঝে সেই স্মৃতি জীবন্ত হয়ে ওঠে, তবে অবশ্য মিসেস চন্দ্রের আড়ালে। এখন গাড়ির মধ্যে সেই মজা নেই, নেই সেই রোমাঞ্চ। এখন ব্যাংকের চালক বেশ কয়েক বছর ধরে সরকারী গাড়ি চালাচ্ছে এবং চন্দ্র সাহেব পিছনে সীটে বসে ঘুরে বেড়ান, এটায় উনি সেই আনন্দ উপভোগ করেন না।
বয়েস হয়েছে এখন, চাকুরী থেকে অবসর নেবার সময় আসন্ন। অত্যাধিক বিয়ার পানে এখন ভুঁড়ি বেশ বেরিয়ে এসেছে, কোমর থেকে প্যান্ট নেমে যায়। জামাকাপড় পড়ে তৈরি হয়ে সাহেব ডান বাম দিকে ফিস্ ফিস্ ফিস্ পারফুম স্প্রে করে, গালের উপর আফটারশেভ লাগিয়ে দরজার দিকে তাকিয়ে বললেন
– আমি প্রস্তুত!
আধা ঘন্টার পরে মিসেস চন্দ্র একটি রঙ্গিন সন্দর সিল্কের শাড়ি পড়ে সুসজ্জিত হয়ে বেরিয়ে এলেন ঘরের থেকে। উনি নিজের শরীরের উপর যত্নশীল। চন্দ্র সাহেব অবশ্য নিজেও স্ত্রীর রূপসজ্জার ব্যাপারে বিশেষ ধ্যান রাখেন। উনি নিজেও খুব সৌখীন মানুষ। আজকে আমাদের জেনেরাল ম্যানেজার সাহেব অবসরপ্রাপ্ত হলেন, তাই সেই উপলক্ষে ওনার বাড়িতে আজ সন্ধ্যায় রিটায়ারমেন্ট পার্টি।
উপস্থিত অফিসারদের এবং তাদের অর্ধাঙ্গিনীদের শুভ সন্ধ্যার অভিবাদন করে পার্টি হলে প্রবেশ করলেন চন্দ্র দম্পতি। মিসেস চন্দ্র চলে গেলেন মহিলা মণ্ডলীর দিকে। অন্যদিকে পানীয়র ব্যাবস্থা ছিল চন্দ্র সাহেব চলে গেলেন সেইদিকে। সেখানে আরেক ভদ্রলোক একটি গ্লাসে স্কচ নিয়ে কিছু অফিসারদের সাথে কথা বলছিলেন।সাম্প্রতিক অতীতে চন্দ্র সাহেব তাঁকে দেখেছিলেন। উনি হলেন মিস্টার মালপানি।
– স্যারের দর্শন আজকাল ঘটছে না, কি ব্যাপার?
– আমিও ভাবছি যে মালপানিজীকে অনেক দিন দেখিনা!
মিস্টার মালপানি এক গ্লাস স্কচ বাড়িয়ে দিয়ে বললেন – হা হা, মহান চন্দ্র সাহেব। কেমন আছেন? এটা স্যার নিন।
– আর মালপানিজী কি হচ্ছে নতুন?
– আমি একটি নতুন প্রকল্প পেয়েছি। এক একর জমি চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঠিকাদারকে 32 কোটি টাকার নির্মাণ প্রকল্প দেওয়া হয়েছে।
– আমাকে বলুন ঐ ইউনিটটা কি?
– সত্যিকারের ব্যাংকার চন্দ্র সাহেব। স্যার ওষুধ তৈরির ফ্যাক্টরি…
– এতে তো প্রদূষণের একটি বড় ঝামেলা আছে?
– স্যার এটা দ্বিতীয় ইউনিট। সব ব্যবস্থা করা আছে, চিন্তা করবেন না। পাশাপাশি প্রায় 700 গজ দূরে একটি বর্ষাতি নালা আছে…
– এতো দীর্ঘদিন সময় নেবে, ততদিনে আমি অবসর নিয়ে নেব, ভাই।
– আপনি কেবল in-principle অনুমতি দিয়ে দিন… আপনি অবসর নিয়ে একটি ভালো নতুন নিজের গাড়িতে বাড়ি ফিরবেন, স্যার।
এই প্রতিশ্রুতি পেয়ে মনটা খুব প্রসন্ন হলো চন্দ্র সাহেবের। এমন সময় মেহতাজী এসে বলল,
– চন্দ্র সাহেব, তোমার পেট কোথায় যাচ্ছে? আমি এইমাত্র ভাবিজীর সাথে সাক্ষাৎ করে এলাম। এখনো কি সুন্দর নিজেকে maintain করে রেখেছেন… তুমি কিছু করো… এই পান করাটা ছেড়ে দাও এবার।
ব্যস, চন্দ্র সাহেবের মেজাজ বিগড়ে গেল। এইরকম সময়ে কি কেউ এইভাবে বলে নাকি? বন্ধুত্বেরও একটা সীমা থাকা প্রয়োজন। তাড়াতাড়ি খাবার খেয়ে নিয়ে স্ত্রীকে বললেন,
– চলো!
– হ্যাঁ।
মিসেস চন্দ্র তার বন্ধুদের বললেন যে চন্দ্র সাহেব খুব শখ করে এই পার্টিতে এসেছিলেন, কিন্তু এখন আচমকা…! তারপরে চন্দ্র সাহেবের পিছনে যেতে লাগলেন।

I think the story needs a little more expansion. The ending is abrupt. Unless, you wanted it like that…
LikeLiked by 2 people