নতুন বছর মানেই নতুন পঞ্জিকা। বাঙালিদের মধ্যে বেণীমাধব শীলের ফুল পঞ্জিকা হলো অন্যতম জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত পঞ্জিকা। পঞ্জিকা বা পাঁজি হলো বাংলা ওড়িয়া, মৈথিলী, অসমীয়া ভাষায় প্রকাশিত হিন্দু জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় পত্রিকা।
কে এই বেণীমাধব শীল ?
বেণীমাধব শীলের পরিবার ছিল হাওড়ার মাকড়দা এলাকার বাসিন্দা । আজ থেকে ১৬০ বছর আগে হাওড়ার মাকরদা থেকে মোহনচাঁদের প্রপিতামহ দ্বারিকনাথ শীল চাকরির খোঁজে এসেছিলেন কলকাতায়। সেদিন দ্বারিকনাথ যেখানে আশ্রয় পেয়েছিলেন, উত্তর কলকাতার সেই রাস্তার নাম আজ জয় মিত্র স্ট্রিট। চাকরি পান পোস্তায় পুরনো ট্যাঁকশালে।
পরে ছেলে পূর্ণচন্দ্রও কাজ পান এই ট্যাকশালে। এই পূর্ণচন্দ্রই প্রথমবার বার করেন ডাইরেক্টরি পঞ্জিকা। কিন্তু, উনি ছিলেন সরকারি চাকুরে। তাই পঞ্জিকার ব্যবসা চালাতেন মা মনমোহিনী দেবীর নামে।
পূর্ণচন্দ্র শীলের ছেলে বেণীমাধব শীল আর চাকরি নয়, আজীবন ব্যবসা করেন পঞ্জিকা নিয়ে। তার হাত ধরেই পঞ্জিকা হয়ে ওঠে সর্বজনবিদিত বেণীমাধব শীলের ফুল পঞ্জিকা। পরাধীন ভারতে কৃতী ব্রিটিশ ব্যবসায়ীরা তাহাদের ব্যবসা সামগ্রীতে নিজেদের নাম জুড়ে দিত।
তারা বিশ্বাস করত এতে ব্যবসার মান উন্নত হয়। পাশাপাশি পন্য সামগ্রীর প্রতি ক্রেতাদের বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়। কিন্তু, এক নামে অনেকেই পণ্য তৈরি হওয়াতে ক্রেতাদের মনে ভ্রান্তি দেখা দেয়।কোনটা আসল আর কোনটা নকল। তাই তিনি প্রথম শুরু করলেন পঞ্জিকাতে নিজের ছবি লাগানো। ক্রেতাদের আর কোন ভ্রান্তির জায়গাই রইলো না।
এক সাহেব প্রফেসর ফিলিপ কটলারসন বেণীমাধবের ব্যবসার এই উদ্ভাবনী ক্ষমতা দেখে বলেছিলেন “এক শতাব্দী অতিক্রম করিয়াও কোন ব্যবসায়ী ইহাহেন সৎ সাহস দেখায়িতে পারিবে না।” বেণীমাধব শীল প্রয়াত হন ১৯৮৯ সালে।
এখন ওই সব পঞ্জিকার মালিক তাঁর বড় ছেলে মোহনচাঁদ এবং ছোট ছেলে অভিজিৎ। এদের মেজ ভাই শশাঙ্ক শীল ১৯৯৯ সালে মারা যান। উত্তর কলকাতার শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনের প্রায় গা-লাগোয়া অবিনাশ কবিরাজ স্ট্রিটে পাঁচতলা বাড়িটি এদের অফিস-কাম-বাড়ি|

Nice informative.
LikeLiked by 1 person
ধন্যবাদ, অরো!
LikeLike