আমরা শৈশব থেকে দেখে আসছি প্রতি বৃহস্পতিবারে আমাদের মা লক্ষ্মীর ঘট বসিয়ে লক্ষ্মীপূজা করতেন। তারপরে দেখি প্রতি পূজায় ঘটের প্রয়োজন হয়। অবশ্য ঘট যে কোন পূজায় অপরিহার্য। মূর্তি বা প্রতিমা না থাকলেও কেবল মাত্র ঘটেও বিধিমতো পূজা করা যেতে পারে।স্বাভাবিকভাবে মনে প্রশ্ন জাগে — ঘট কিসের প্রতীক? যে কোন পূজায় ঘট কেন অপরিহার্য? কিছু সামান্য পরিশোধ করে অনেক ভাষ্য জানলাম, এক ভাষ্য অনুযায়ী ঘট আমাদের দেহের প্রতিরূপ।
পূজার সময় পঞ্চগুড়ি দিয়ে পিঠ তৈরী করা হয়। এই পঞ্চগুড়ি, পঞ্চমহাভূত অর্থাৎ ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ ও ব্যোম এর প্রতীক। এই পঞ্চমহাভূতের উপর মৃত্তিকা দিয়ে পিঠ করা হয়। মৃত্তিকা বেদীর উপর পঞ্চশষ্য দেওয়া হয়। পঞ্চশষ্য আমাদের কাম ক্রোধ, লোভ, মোহ ও মাৎসর্য্য এই পঞ্চবৃত্তির প্রতীক। এর উপর ঘটস্থাপন করা হয়।
ঘট আমাদের দেহের প্রতীক।আধ্যাত্মিক ভাষায় দেহকে দেহ ঘট বলা হয়। ঘটের ভেতর পঞ্চরত্ন দেওয়া হয়।আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয়, যথা-চক্ষু, কর্ণ, নাসিকা,ত্বক ও জিহ্বা হলো পঞ্চরত্ন।এরপর ঘটে জল ঢেলে পূর্ণ করা হয়। জল হলো দেহরস অর্থাৎ রক্ত। ঘটে এবার পঞ্চ পল্লব দেওয়া হলো, যা আমাদের গ্রীবা বা গলার রূপ।আমাদের গ্রীবায় পঞ্চবায়ু অর্থাৎ পান, অপান, উদান, সমান ও ব্যান থাকে। এই পঞ্চবায়ুই পঞ্চ পল্লবের প্রতীক। এর উপরে ডাব বা নারিকেল দেওয়া হলো, আমাদের মুখের মতোই নারিকেলেরও চোখ মুখ, নাক দেখা যায়। সেই কারণেই নারিকেল আমাদের মুখ- মন্ডলের প্রতিরূপ। মস্তক থাকলে তাতে আচ্ছাদন দিতে হয়, আর সেই কারণে নারিকেলের উপর গামছা বা বস্ত্র দেওয়া হয়। এই হলো আমাদের দেহের প্রতিরুপ। আর কান্ডকাঠী চার বেদের প্রতীক।
সংস্কৃতে এক মন্ত্র আছে তার অনুযায়ী ঘট হোল মহাতীর্থক্ষেত্র। সেই কলশ স্থাপনা মন্ত্র উধৃত করলাম —
सरित: सागरा: शैलास्तीर्थानि जलदा नदा:।
आयान्तु मम भक्तस्य दुरित-क्षय-कारका:॥
कलशस्य मुखे विष्णु: कण्ठं रूद्र: समाश्रित:।
मूले तस्य स्थितो ब्रह्मा मध्ये मातृ–गणाः स्मृताः॥
कुक्षौ तु सागरा: सप्त सप्त-द्वीपा वसुंधरा।
ऋग्वेदोऽथ यजुर्वेदः साम–वेदोप्यथर्वणः॥
अंगैश्च सहिता: सर्वे कलशं तु समाश्रिता:।
देव-दानव-सम्वादे मध्यमाने महोदधौ ॥
उत्पन्नोऽसि तदा कुम्भ! विधृतो विष्णुना स्वयं|
त्वत्त: सर्वाणि तीर्थानि देवा: सर्वे त्वयि स्थिता: ॥
त्वयि तिष्ठन्ति भूतानि त्वयि प्राणा: प्रतिष्ठिता: ।
शिव: स्वयं त्वमेवासि विष्णुस्त्वं च प्रजापति: ॥
आदित्या वसवो रुद्रा विश्वेदेवा: स-पैतृका:
त्वयि तिष्ठन्ति सर्वेऽपि यत: काम-फल-प्रदा: ॥
त्वत्- प्रसादादिमं कर्म कर्तुमीहे जलोद्भव!
सान्निध्यं कुरु में देव! प्रसन्नो भव सर्वदा ॥८॥

Very informative. Most of us go through the motion of the rituals without understanding the reason or meaning of it.
LikeLike
ধন্যবাদ, অরঞ্জিত! সত্যি তাই।
LikeLike