প্রাণের উৎসব রাজধানীতে : দিল্লির দুর্গাপূজার বিস্তার

দিল্লিতে দুর্গাপূজার ইতিহাস প্রায় দেড় শতাব্দীরও পুরোনো। প্রথমবার কিছু বাঙালি মুঘল দরবারে কাজ করতে গিয়ে দুর্গাপূজা আয়োজন করেন, আর ১৯১০ সালে বল্লিমারানে শুরু হয় প্রথম সর্বজনীন পূজা, যা পরে কাশ্মীরি গেট পূজা নামে পরিচিত হয়। রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লি সরানোর পর টিমারপুর ও নিউ দিল্লি কালীবাড়ি পূজার মাধ্যমে এর বিস্তার ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে পূজা ছড়িয়ে পড়ে করোল বাগ, লোধি রোড, দরিয়াগঞ্জ থেকে শুরু করে NCR-এর নানা অঞ্চলে। বর্তমানে চিত্তরঞ্জন পার্ক বা “মিনি বেঙ্গল” দিল্লির দুর্গাপূজার প্রাণকেন্দ্র, আর গোটা দিল্লি-এনসিআরে আজ ৪০০-রও বেশি পূজা অনুষ্ঠিত হয়—যা প্রমাণ করে কীভাবে প্রবাসী বাঙালির ঐক্য ও আবেগ রাজধানীতে এক অনন্য সাংস্কৃতিক উৎসব গড়ে তুলেছে।

মশা: ইতিহাস, বিজ্ঞান & হাসির গল্প — বিশ্ব মশা দিবসে এক ঝলক

বিশ্ব মশা দিবস – ২০ আগস্ট পালিত হয় ১৮৯৭ সালে স্যার রোনাল্ড রসের আবিষ্কার স্মরণে, যে তিনি প্রমাণ করেছিলেন ম্যালেরিয়া স্ত্রী অ্যানোফিলিস মশার মাধ্যমে ছড়ায়। মশা সাধারণত রোগবাহক হিসেবে পরিচিত হলেও, শুধুমাত্র স্ত্রী মশাই কামড়ায় এবং ইতিহাসেও এদের অদৃশ্য প্রভাব লক্ষ্য করা যায়—আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের অভিযান থেকে সরাইঘাটের যুদ্ধে। আধুনিক যুগেও মশাকে বিভিন্ন পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছে। অর্থনীতিতে মশা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমেও অনেক চাকরি এবং শিল্প চলে। এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, মশাকে হত্যা না করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা যেমন মশারি ব্যবহার ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি।

তাসের ঘর : আশাপূর্ণা দেবীর কলমে সাহসী মেয়ের গল্প

আশাপূর্ণা দেবী, বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য রত্ন, ১৯০৯ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং ১৯৯৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। মাত্র ১৩ বছর বয়সে কবিতা লিখে সাহিত্য জগতে প্রবেশ করেন তিনি। "তাসের ঘর" এবং "অনাচার" এর মতো তাঁর গল্পগুলো মানুষের মনস্তত্ত্ব এবং সামাজিক নৈতিকতার গভীর বিশ্লেষণ করেছিল। আশাপূর্ণা দেবী তাঁর লেখনীর মাধ্যমে সমাজকে মানবিকতার শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনেও তিনি ছিলেন উদারমনা এবং অতিথিপরায়ণ, যেমন তাঁর শাশুড়ির জন্য নিরামিষ রান্না থেকে শুরু করে বৌমার পিএইচ.ডি অর্জনের আনন্দে সহকর্মীদের জন্য রেস্তোরাঁয় খাওয়ানো। তাঁর সাহিত্যকর্ম ও জীবনদর্শন আজও অনুপ্রেরণা যুগিয়ে চলেছে। আজ তাঁর মৃত্যু দিবসে, আশাপূর্ণা দেবীকে গভীর শ্রদ্ধা জানাই।

মৃত্যু নিয়ে ব্যবসা: এ কেমন সংস্কৃতি!

মৃতদের প্রতি সম্মান জানানো আমাদের সংস্কৃতি। কিন্তু বর্তমানে মিডিয়ায় মৃত্যুর সংবাদ চিৎকারে পরিবেশিত হয়, যা শোকের অনুভূতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। মৃত্যু ও শোকের কথা মিডিয়া বাণিজ্যে পরিণত হওয়ায় মানবিক মূল্যবোধ হুমকির সম্মুখীন। তাই শোকের যথাযথ মর্যাদা রক্ষার আহ্বান জানানো হচ্ছে, যাতে মানুষের মানবিক অনুভূতি অক্ষুণ্ন থাকে।

বইমেলা, লুচি-আলুর দম, আর চিড়িয়াখানার হাতি!

কলকাতা বইমেলা চলছে জোর কদমে! বইপ্রেমীদের জন্য এটি এক ঐতিহ্যের উৎসব, যেখানে নতুন বইয়ের খোঁজ যেমন চলে, তেমনি চলে আড্ডা, গল্প, আর নানা রকম খাবারের মহোৎসব। বইমেলা মানেই কি শুধু বই কেনা? নাকি বইমেলার আনন্দ লুকিয়ে থাকে তার পরিবেশে, সেই আড্ডায়, সেই লুচি-আলুর দমের ঘ্রাণে, পুরনো বইয়ের পাতার গন্ধে আর নতুন লেখকদের আবিষ্কারে? অনেকে আসেন নতুন বই কিনতে, কেউ আসেন পুরনো বইয়ের গন্ধ খুঁজতে, কেউ বা আসেন স্রেফ বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে, আড্ডা দিতে, কিংবা এক প্লেট ঘুগনি খেয়ে মনটা ভরিয়ে নিতে।

খান আব্দুল গাফফার খান ও শান্তিনিকেতনের অমলিন স্মৃতি

খান আব্দুল গাফফার খান, যিনি "সীমান্ত গান্ধী" নামে পরিচিত, ১৯৩৪ এবং ১৯৬৯ সালে শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে সাক্ষাৎ করেন, যা তাঁদের পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং আদর্শের মিলকে প্রতিফলিত করে। প্রথম সফরে, জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর গাফফার খান রবীন্দ্রনাথের গ্রামীণ উন্নয়নের কাজ দেখে মুগ্ধ হন। কবিগুরু নিজে বোলপুর স্টেশনে গিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান, যা তাঁদের গভীর সংযোগের প্রমাণ। দ্বিতীয় সফর, ১৯৬৯ সালে, খান সাহেবের জন্য একটি আবেগপূর্ণ প্রত্যাবর্তন ছিল। বার্ধক্যে ক্লান্ত গাফফার খান শান্তিনিকেতনের স্মৃতি ফিরে দেখেন এবং গুরুদেবের স্নেহ-ভালবাসা স্মরণ করেন। এই দুই মহান মানুষের বন্ধুত্ব ঐক্য, শান্তি এবং মানবতার আদর্শের প্রতীক হয়ে উঠেছিল।

বাংলা ভাষার অনন্য সাহিত্যিক: শিবরাম চক্রবর্তী

১৩ ডিসেম্বর, ১৯০৩—কলকাতার আকাশে সেদিন একটি নতুন তারা উঁকি দিয়েছিল। এ তারাটি শুধু আলোকিতই করেনি; হাসির ঝলকানিতে ভরিয়ে দিয়েছিল এক বিস্তীর্ণ আকাশ। বাংলা সাহিত্যের এক অমর প্রতিভা, শিবরাম চক্রবর্তী, এই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। হাস্যরসের অমিত শক্তি দিয়ে তিনি বাঙালির দৈনন্দিন জীবনে এমন এক রঙের ছোঁয়া এনে দিয়েছিলেন যা আজও অক্ষুণ্ণ। শিবরাম: হাস্যরসের শিল্পী শিবরামের সৃষ্টির …

Continue reading বাংলা ভাষার অনন্য সাহিত্যিক: শিবরাম চক্রবর্তী

যুগ্ম পদবীর জটিলতা এবং হাস্যরস

আজকে সামাজিক মাধ্যমে এই লেখাটা পড়ে মজা পেলাম কিন্তু কিছু ভাবতেও বাধ্য হলাম। অধুনা শিক্ষিতা বঙ্গতনয়াগণ, নিজের পরিচিতি এবং পিতৃকুলের পদবী রক্ষা করিবার জন্য বিবাহের পর শ্বশুরকুলের পদবী যুক্ত করিয়া এক নবতর প্রথার সূচনা করিয়াছেন। ফলতঃ, জন্ম লইতেছে নানান অভিনব যুগ্মপদবী, যাহা একদিকে সমাজের বিবর্তনকে চিহ্নিত করিতেছে এবং অন্যদিকে প্রতিদিনের জীবনে সৃষ্টি করিতেছে অপূর্ব হাস্যরস। তাহা হইলে এই পদবী সংযুক্তিকরণ কি সমাজের অগ্রগতির পরিচায়ক, না কি ভবিষ্যতে আরও জটিলতার সৃষ্টি করিবে? যুগ্মপদবী কি রক্ষা করিয়া চলা উচিত, না কি নামের জটিলতা হ্রাস করিবার জন্য কোনও সহজ সমাধান থাকা উচিত?

চাইনিজ ওয়াল গোষ্ঠ পাল

দর্শনা স্টেশনে বাক্সের মধ্যে গোষ্ঠ পালের ছবি দেখে পাক সীমান্ত রক্ষী বললেন আগে বলবেন তো আপনি গোষ্ঠ পালের মা...! ঘটনা ভারত ভুখণ্ড খণ্ডিত হবার কিছু পরের...তারপর! দর্শনা স্টেশনে এসেছেন বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এক বৃদ্ধা, সম্বল বলতে হাতের একটা লাঠি, আর ছোট টিনের তোরঙ্গ৷ পাকিস্থানের প্রহরীরা জবরদস্ত খানা-তল্লাশি করছেন, বর্ষীয়সী রমণীকে বেশি ঘাটতে হল না,প্রহরীর …

Continue reading চাইনিজ ওয়াল গোষ্ঠ পাল

ইংরেজবিরোধী ‘গাঁধী বুড়ি’ মাতঙ্গিনী হাজরা

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ধাপে ধাপে লড়াই করেছে। মাতঙ্গিনী হাজরা ছিলেন এমনই একজন ত্যাগী মা, যিনি এই সংগ্রামের পথে তাঁর নিরক্ষরতা, বার্ধক্য এবং দারিদ্র্যকে আসতে দেননি। মাতঙ্গিনী হাজরার জন্ম ১৮৭০ সালে। তমলুক থেকে সামান্য দূরে হোগলা গ্রামে তিনি অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। বাবা ঠাকুরদাস মাহাতো, মা ভগবতী দেবী। পরিবারের উপার্জনের একমাত্র পথ ছিল …

Continue reading ইংরেজবিরোধী ‘গাঁধী বুড়ি’ মাতঙ্গিনী হাজরা