দুর্গাপূজা শুধু ভক্তি নয়, এটি মানুষের মন ও প্রবৃত্তির গভীর প্রকাশ। অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে অনুষ্ঠিত সন্ধিপূজার সময় দেবী দুর্গা মহিষাসুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অপরূপা রূপে উপস্থিত হন—সোনালি গাত্রবর্ণ, হলুদ বস্ত্র, আর দশটি হাতে দশ ধরনের মারনাস্ত্র। যুদ্ধ চলাকালীন চণ্ড ও মুণ্ড নামে দুই অসুর আক্রমণ করলে দেবীর ক্রোধ অগাধ রূপে ফুটে ওঠে; মুখ নীল, ত্রিনয়ন উন্মীলিত, ভ্রুকুটি থেকে জন্ম নেন দেবী চামুণ্ডা, নীলপদ্মের মতো শ্যামবর্ণা, যিনি চণ্ড ও মুণ্ডের বধকারী। এই পূজায় দেবীকে রক্তবর্ণের মালা, একশো আটটি পদ্মফুল ও দীপমালার মাধ্যমে আরাধনা করা হয়। চণ্ড-মুণ্ডের বধ মানুষের প্রবৃত্তি ও নিবৃত্তির প্রতীক, যা ভোগ এবং ত্যাগের সংঘাতকে নিয়ন্ত্রণ করে। চামুণ্ডা সহ ৬৪ যোগিনী দেবীর শক্তির বহিঃপ্রকাশ, যা পূজার মাধ্যমে মানুষের মন ও জীবনের অমোঘ শক্তিকে আয়ত্তে আনে এবং সন্ধিপূজার দর্শন সাত জন্মের তীর্থযাত্রার সমতুল্য ফল দেয়।